বৃষ্টি হলেই পানিবন্দি হয়ে পড়েন বাসিন্দারা

বৃষ্টি হলেই পানিবন্দি হয়ে পড়েন বাসিন্দারা

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসিক এলাকা বলাশপুর। যেখানে বসবাস কয়েক হাজার মানুষের। বৃদ্ধি হলেই দুর্ভোগ তাদের নিত্যসঙ্গী। একদিন ভারী বৃদ্ধি হলে অন্তত সপ্তাহখানেক পানিবন্দি থাকতে হয় বাসিন্দাদের। তবে এ দুর্ভোগ লাঘবে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

শনিবার (১৪ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, আলিয়া মাদরাসা রোড থেকে মড়লপাড়া হয়ে বলাশপুর মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের বাসার মধ্যে পানি উঠেছে। ম্যানহোলের ময়লা পানির সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানায়, সম্প্রতি টানা বর্ষণের কারণে ১০ দিন ধরে এমন পানিবন্দি হয়ে আছেন তারা।

স্থানীয় আব্দুর রশিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমরা এলাকায় খুবই খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ঠিকভাবে চলাচল করতে পারছি না পানির জন্য। সবচেয়ে বেশি সমস্য হচ্ছে নারী এবং শিশুদের ক্ষেত্রে। পানি থাকার কারণে এলাকায় কোনো কাঁচাবাজারও বসে না। অন্যদিকে এই দুর্গন্ধযুক্ত এই পানির কারণে অনেক শিশু নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।

স্থানীয় বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন রেজা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই রাস্তা নগরীর খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমাদের অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে। বিগত দিনে বলাশপুরের এই রাস্তাঘাট এমন জলাবদ্ধতা ছিল না। মাঝেমধ্যে রাস্তার কাজ হলেও ড্রেন সংস্কারে কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মুদি দোকানি সুলতান আহম্মেদ বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে পানি যাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় দোকান পানিতে তলিয়ে যায় যাওয়ার অবস্থা। পানির জন্য এলাকার মানুষ ঘরবন্দি হয়ে বসবাস করছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকায় এটা মেনে নেওয়া যায় না।

ময়মনসিংহের পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শিব্বির আহম্মেদ লিটন বলেন, ময়মনসিংহে জলাবদ্ধতা নিরসনে অনেকগুলো প্রকল্প হয়েছিল। এই প্রকল্পগুলোর আলোর মুখ নগরবাসী এখনো দেখতে পারে নাই। কর্তৃপক্ষের জলাব্ধতা নিরসনে নগরবাসীর কাছে জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা কীভাবে আছে বিষয়টি পরিষ্কার না।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্বাস উদ্দিন মন্ডল বলেন, জলবদ্ধা নিরসনে আমাদের নানামুখী কর্মসূচি ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো করোনার জন্য কিছু করতে পারেনি। শুধু বলাশপুর নয়, আশপাশের কয়েকটি এলাকায় পানিবন্দি হয়ে অনেকেই দুর্ভোগের মধ্যে আছে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তা সংস্কারের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আশা করা যাচ্ছে কাজ শুরু হলে মানুষের দুর্ভোগ কমে যাবে।

সিটি মেয়র ইকরামূল হক টিটু বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণেই জলাবদ্ধতা। এটি নিরসন করতে হলে ড্রেনের ভেতর ঢুকে পরিষ্কার করতে হবে। তবে আপাতত এখন পানির জন্য তা করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্ষা গেলে কাজ শুরু করতে হবে। তবে এর স্থায়ী সমাধানের জন্য বাসিন্দাদের মধ্যেও সচেতনতা জরুরি।

আপনি আরও পড়তে পারেন